মা লক্ষ্মী হলেন ধন সম্পদের দেবী। যে গৃহে মা লক্ষ্মী অবস্থান করেন সেই গৃহ ধন সম্পদে ভরে যায়। কিন্তু লক্ষ্মীদেবী সদা চঞ্চলা। গৃহে বিভিন্ন প্রকার অনাচার হলে মা লক্ষ্মী তৎক্ষনাৎ সেই গৃহ ত্যাগ করেন। আজ আপনাদের জানাবো মা লক্ষ্মী দেবর্ষি নারদকে কোন কাজগুলোর কথা বলেছিলেন যা করলে তিনি গৃহ ত্যাগ করেন?
একবার লক্ষ্মী নারায়ণ যখন বৈকুণ্ঠধামে বসে আলাপ করছিলেন তখন দেবর্ষি নারদ সেখানে উপস্থিত হয়। নারদ লক্ষ্মীদেবীকে জিজ্ঞেস করলেন কেন তিনি সদা চপলা চঞ্চলা। কেন তিনি মুহূর্তের মধ্যে গৃহ ত্যাগ করেন। যার ফলে অন্নভাবে কেউ আত্মহত্যা করে আবার কেউবা পরিবার ত্যাগ করে। মা লক্ষ্মী তখন বলেন, যে গৃহে অনাচার হয় সেই গৃহ তিনি ত্যাগ করেন আর মানুষের এই দুঃখ অথবা পতন তাদের দুষ্কর্মের ফল। যে নর নারীগণ শাস্ত্রজ্ঞান মানে না এবং অশাস্ত্রকে শাস্ত্রজ্ঞান মনে করে সেই গৃহ মা লক্ষ্মী ত্যাগ করেন। যেখানে অনাচার হয় সেই স্থানে লক্ষ্মী থাকেন না।
যারা পরনিন্দা পরচর্চ্চা সর্বদা ভালোবাসে ও যাদের মন ক্রোধ ও অহংকারে ভরা সেই গৃহেও মা লক্ষ্মী থাকেন না। ধরা কে সরা জ্ঞান করা ব্যক্তি, কলহে লিপ্ত ব্যক্তি ও প্রতি সন্ধ্যাকালে প্রদীপ না দেওয়া ব্যক্তিদের গৃহেও তিনি থাকেন না। এছাড়াও সূর্যদয় হওয়ার পর যারা গোবরের ছিটা দেয়, যারা বাসি বস্ত্র পরে থাকে এবং যারা সন্ধ্যাকালে নিদ্রা আর নিশি জাগরণে অভ্যস্ত তাদের গৃহও মা লক্ষ্মী ত্যাগ করেন। যারা অতিথি দেখলে সেবা তো দূর বরং ক্রোধে জ্বলে ওঠে তদের গৃহে মা লক্ষ্মী থাকেন না। কেননা অতিথি স্বয়ং নারায়ণের রূপ হয়ে থাকে। গুরুজনের হিতবাক্যে যারা রুষ্ট হয় ও
তাদের প্রতি বিদ্রুপ করে এবং উলুধ্বনি দিতে বললে যাদের মাথায় বাজ পরে, যারা এটা নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে সেই গৃহ ও তিনি ত্যাগ করেন।
এছাড়াও যারা স্বামীর আত্মীয়কে সর্বদা পরজ্ঞান করে সেবা যত্ন করে না, যারা পরশ্রীকাতর ও যারা মিথ্যা কথা ছাড়া কখনো সত্য বলে না তাদের গৃহ মা লক্ষ্মী ত্যাগ করেন।
মা লক্ষ্মী নারদকে বলেন এই সব অনাচার দেখলে আমি এক গৃহ ত্যাগ করে অন্য গৃহে যায়।
এইসব দোষ ঘুচিয়ে যারা সদাচারী হয়ে ভক্তিভাবে আমার আরাধনা করে আমি সেই গৃহে অবস্থান করি। ভক্তি হীনের পূজা ব্রত সব বৃথা হয় কেননা শুধুমাত্র ফুল ও জলে কোন লাভ হয় না, ভক্তিই পরম শক্তি যা আমাকে বেধে রাখে।