মহাভারতের যুদ্ধ ১৮ দিন ধরে চলেছিল।এই মহাভারতের যুদ্ধ কুরুক্ষেত্রের ভূমিতে হয়েছিল তা কারোরই অজানা নয়। ১৮ দিন ধরে চলা এই প্রচণ্ড যুদ্ধে বেশিরভাগ যোদ্ধারই প্রাণ গিয়েছিল।আজ আপনাদের জানাবো মহাভারতের যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে কুরুক্ষেত্রকেই কেন নির্বাচন করা হয়েছিল।মহাভারতের যুদ্ধ মূলত কৌরব ও পাণ্ডবদের মধ্যে হয়েছিল। তবে অন্যান্য রাজাদের মধ্যে কিছু রাজা
পাণ্ডবদের পক্ষে এবং কিছু কৌরবদের পক্ষে যুদ্ধ করেছিল। যদিও পাণ্ডবরাও কৌরব ছিল কিন্তু তারা রাজা পাণ্ডুর পুত্র ছিল বলে তাদের পঞ্চপাণ্ডব বলা হতো। মহাভারতের যুদ্ধ কোথায় হবে সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব ছিল শ্রীকৃষ্ণের ওপর। দুর্যোধন ও তাঁর সঙ্গীরা অধর্ম করেই চলেছিল।
তখন শ্রী কৃষ্ণ ঠিক করেছিলেন মহাভারতেরএই যুদ্ধেই অধর্মের বিনাশ করে তিনি ধর্ম প্রতিষ্ঠা করবেন। এজন্য তিনি কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে কৌরবদের বিনাশ নিশ্চিত করেন। শ্রীকৃষ্ণের মনে হয়েছিল কৌরব ও পাণ্ডবপক্ষের প্রচণ্ড রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে যখন একের পর এক সদস্যকে একে অন্যের দ্বারা নিহত হতে দেখবে,তখন দুই পক্ষ যুদ্ধ ছেড়ে সন্ধির পথে হাঁটতে পারে। আবার প্রচণ্ড রক্ত ও সংঘর্ষ দেখেও ভাইয়ে ভাইয়ে হারানো প্রীতি আবার ফিরে আসতে পারে, তারা একে অন্যকে ক্ষমা করে দিতে পারে। এমন হোক শ্রীকৃষ্ণ তা কখনোই চাননি কারণ যদি এমনটা হয় তবে এই ধরণী থেকে অধর্মের বিনাশ হবে না আর ধর্ম প্রতিষ্ঠা করাও হবে না।
এজন্য যুদ্ধের জন্য শ্রীকৃষ্ণ এমন প্রান্তর চেয়েছিলেন যেখানে যথেষ্ট পরিমাণে ক্রোধ এবং বিদ্বেষ রয়েছে আর ভাইয়ের হাতে ভাইয়ের প্রাণনাশের ইতিহাস ও রয়েছে।এক ভাইয়ের আঘাতে অন্য ভাইয়ের বুক থেকে বেরনো রক্তের দাগ কৌরব ও পাণ্ডবদের মধ্যে প্রীতি জাগাতে পারবে না এমনই প্রান্তর চেয়েছিলেন কৃষ্ণ। তাই তিনি বিভিন্ন স্থানে বার্তাবাহক পাঠিয়েছিলেন খোজ নিতে। একজন বার্তাবাহক এসে তাকে কুরুক্ষেত্রের প্রান্তরের কথা জানান।
কুরুক্ষেত্রের প্রান্তরে একবার এক বড় দাদা তার ছোট ভাইকে ডেকে চাষের ক্ষেতে বাধ দিতে বলেছিলেন। যাতে সব জল জমিতে ঢুকে ফসল নষ্ট না হয়। কিন্তু ছোট ভাই বাধ দিতে অস্বীকার করে। তখন ক্ষোভের প্রবণতায় বড় ভাই রেগে গিয়ে ছোট ভাইকে হত্যা করে এবং তারপর তার মৃতদেহ টেনে নিয়ে গিয়ে জলের মুখে আটকে বাধ দেয়। এই মর্মান্তিক ঘটনার কথা শুনে শ্রীকৃষ্ণ স্থির করেন যে এখানেই হবে মহাভারতের যুদ্ধ।