একদিন পঞ্চপাণ্ডব দ্বাপর যুগের শেষের দিকে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কাছে প্রশ্ন করেছিলেন যে “কলিযুগ কেমন হবে” ?
এর বেশ কিছুকাল পর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ একদিন পাঁচ ভাইকে পরামর্শ দেন যে এক জঙ্গলের ভেতর পাচ ভাই পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন পথ দিয়ে হাটবে এবং হাটা শেষে আবার শ্রী কৃষ্ণের কাছে ফিরে আসতে হবে । তারপর তারা কি দেখলেন এসে কৃষ্ণের কাছে জানাতে হবে ।
১) যুধিষ্ঠির একটা পথ ধরে হাটলেন, সে ওই পথে হেঁটে যাওয়ার সময় একটা অদ্ভুত জিনিস লক্ষ্য করলেন -একটা হাতি দাড়িয়ে আছে কিন্তু তার দুটি শুঁড় ।যুধিষ্ঠির ফিরে এসে এই অদ্ভুত হাতির কথা শ্রীকৃষ্ণের কাছে জানালেন ।
শ্রীকৃষ্ণ বলেন যে “কলি,যুগের মানুষ হবে ঠিক এই রকম । তারা মুখে বলবে এক কথা, কিন্তু তারা কাজ গুলো করবে সম্পূর্ণ আলাদা ।”
শ্রীকৃষ্ণ পঞ্চপান্ডবদের কলিযুগ সম্পর্কে কি ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন
২) ভীম ও অন্য আরেকটি পথ ধরে হাটলেন এবং সে দেখতে পেলেন,একটা গরু তার বাছুর কে আদর করছে চেটে চেটে,কিন্তু গরুটিএত বেশি চাটছে যে বাছুরটির গায়ের ছাল উঠে গিয়ে রক্ত বের হওয়া শুরু করেছে ।
ভীম এই কথাটি শ্রীকৃষ্ণের কাছে জানালেন ।
শ্রীকৃষ্ণ তখন বলেন, যে “কলি যুগের মাতা,পিতা ও হবে ঠিক এইরকম । মাতা,পিতার অন্ধ স্নেহ ও তাদের অতিরিক্ত ভালোবাসাই, সন্তানদের ক্ষতির কারণ হয়ে উঠবে। এতে সন্তানদের বিচার বুদ্ধিহীন ও পরনির্ভরশীল করে তুলবে। এবং অসৎ পথে গমন করবে।যা আগামীতে স্বাভাবিক ও সুস্থ জীবন যাপনে তাদের কাছে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে।”
৩) অর্জুন ও একটি পথ ধরে হেটে কৃষ্ণের কাছে এলেন অর্জুন দেখতে পেলেন, একটি নদীতে একটি পচাগলা মৃত ছাগল পরে আছে আর ওই ছাগলের উপর বসে আছে একটা বড় শকুন । বড় শকুনের দুই ডানায় লেখা আছে বেদ মন্ত্র। “কলিযুগের কিছু ভন্ড সাধকেরা ঠিক এই রকম হবে শ্রীকৃষ্ণ বলেন,। অর্থাৎ দেশ ও সমাজের বুকে তাদের প্রচুর ধার্মিক ও জ্ঞানী হিসেবে খ্যাতি থাকবে, কিন্তু তাদের প্রকৃতমানসিকতা হবে শকুনের ন্যায় ।” অর্থাৎ তারা সবাইকে উপর উপর ধার্মিক ভাব দেখাবে, কিন্তু তারা আসলে শাএ গেনএ অগ্গ থাকবে।
৪) নকুল ও দেখে এসে কৃষ্ণের নিকট বললেন যে এক বিশালাকার পাথরের খন্ড পাহাড় থেকে গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ে যাচ্ছে , কিন্তু কোন বড় বৃক্ষ তাকে কোনোভাবেই আটকাতে পারছে না । অবশেষে সামান্য একটা (গুল্ম) গাছের তলায় এসে আটকে যায় পাথর টি ।”শ্রীকৃষ্ণ তখন বলেলন,শ্রীকৃষ্ণ পঞ্চপান্ডবদের কলিযুগ সম্পর্কে কি ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন।কলিযুগের মানুষের পাপের পরিমাণ এতই বেড়ে যাবে যে পাপ ওই পাথরের সমান হবে। কিন্তু কোনো মানুষ যদি এই হরিনাম রূপী গুল্ম গাছটিকে ধরতে পারে, তাহলে সব বিপদ থেকে রক্ষা পাবে ।” অর্থাৎ হরিনামই হবে একমাএ মুক্তির উপায়।
৫) সহদেব দেখতে পেলেন একটা বিশাল গভীর কূয়া ।শ্রীকৃষ্ণ পঞ্চপান্ডবদের কলিযুগ সম্পর্কে কি ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন। কিন্তু অবাক হয়ে দেখতে পেলেন যে ওই কূয়ার শেষ প্রান্তে বিন্দুমাত্র জল নেই।শ্রীকৃষ্ণ শুনে বলেলন যে কলিযুগের বিভিন্ন জায়গায় কিছু কিছু বাড়ি হবে বিশাল আকৃতির যা দেখতে জাঁকজমকপূর্ণ এবং তাদের ধনসম্পত্তিও থাকবে অনেক গভীর কূয়ার সমান কিন্তু ওই সকল বাড়িতে দেখা যাবে ভগবানের জন্য কোন মন্দির নেই । বাড়ির মালিকদের মধ্যে কোন সুখ থাকবেনা।(এখন ঘোর কলি যুগ চলছে আর একটু লক্ষ্য করে দেখবেন,,,বাস্তবে কিন্তু তাই ঘটছে । কলিযুগে একটা মাএ মুক্তির উপায় আছে হরিনাম করা, আমাদের উচিৎ প্রতিদিন সময় বের করে হরিনাম কির্তন করা।