ভারতের শীর্ষ দশটি রহস্যময় মন্দির বিশ্বজুড়ে রয়েছে রহস্যের ভান্ডার। রহস্য কথাটা শুনলেই আমাদের জানার ইস্যাটা আরও বেড়ে যায়.আর সেটা যদি হয় মন্দির সম্পর্কিত কোনো রহস্য তাহলে তো কোনো কথায় নেই।
বিজ্ঞান প্রযুক্তির কল্যাণে এমন অনেক রহস্যের দ্বার জনসম্মুখে উন্মোচিত হলেও কিছু রহস্যের আজ অব্দি কোন সমাধান পাওয়া যায়নি.এমনি অনেক মন্দির আসে যার,রহস্য আমাদের অজানাই রয়ে গেছে।
১. ঐরাবতেশ্বর মন্দির
ঐরাবতেশ্বর মন্দিরটি দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের তানজাবুর জেলার কুম্বাকোনামের নিকটে দারাসুরম শহরে অবস্থিত দ্রাবিড় স্থাপত্যের একটি হিন্দু মন্দির। খ্রিস্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীতে রাজারাজা চোলার নির্মিত এই মন্দিরটি হ’ল ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান।ঐরাবতেশ্বর মন্দিরের বাদ্যযন্ত্র, এবং সপ্তসুর সর্বকালের অন্যতম দুর্দান্ত রহস্য।মন্দিরটি দ্রাবিড় স্থাপত্য শৈলীর সাহায্যে নির্মিত এবং এটি অত্যন্ত উত্কীর্ণ খোদাই এবং ভাস্কর্যগুলির জন্য পরিচিত।
মন্দিরটি সম্পর্কে আকর্ষণীয় তথ্যটি হ’ল মন্দিরের প্রবেশ পথে পাথরের তৈরি ধাপ রয়েছে, যখন কেউ সেটার উপর দিয়ে হাটে ,তখন সংগীতের আলাদা আলাদা সাতটি স্বর তৈরি হয় । প্রতিটি পদক্ষেপ বাদ্যযন্ত্রের স্কেলের আলাদা স্বর প্রকাশ করে।
এই আলাদা আলাদা সুর উৎপন্নের পিছনে কোনো কারণ আজও জানা যায়নি।
.তবে, ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার জন্য, এই বাদ্যযন্ত্রগুলির ধাপগুলি ধাতব গ্রিল দিয়ে ঢাকা দেওয়া হয়েছে.
২. শ্রী বিজয়া ভিট্টালা মন্দির
ভারতের শীর্ষ দশটি রহস্যময় মন্দির অতুল্য ভারতের রাজ্য কর্ণাটকের একটি ছোটো শহর ‘হাম্পি’ যার মধ্যযুগীয় নাম বিজয়নগর বা বিরুপাক্ষপুর,যা কিনা অতীতে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিলো,এরই ঠিক গা ঘেঁষে প্রবাহমান তুঙ্গভদ্রা নদীর দক্ষিণে অবস্থিত খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ শতকে তৈরি “ভিট্টালা মন্দির”।
মন্দিরটি ভগবান বিষ্ণুর অবতার ভিট্টাল দেবতাকে সমর্পিত।সমগ্র ভারতবর্ষে যতগুলি মন্দির আছে তাদের প্রত্যেকটির তুলনায় এর নির্মাণশৈলী সম্পূর্ণ আলাদা যা দেখতে বিশ্বজুড়ে পর্যটক এখানে ভিড় করেন।বর্তমানে মন্দিরটি ইউনেস্কো স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের অন্যতম।কৈলান মন্ডপ নামের মূল মন্দিরটি যেখানে ভিট্টাল ভগবানের মূর্তি স্থাপিত সেটি বিশেষভাবে প্রসিদ্ধ তাঁর কলাত্মক আবিষ্কার ও অদ্বিতীয় সঙ্গীতের স্তম্ভ গুলির জন্যে।মন্দিরটিতে গ্রানাইট পাথরের নির্মিত মোট ৫৬টি বাদ্যযান্ত্রিক সরু ও ভিন্ন ভিন্ন আকৃতির স্তম্ভ রয়েছে, যেগুলির গায়ে সামান্য টৌকা মারলেই সঙ্গীতের সপ্ত সুর উৎপন্ন হয়।এই ৫৬ টি পিলারের মাধ্যমে এই সপ্তসুর উৎপন্ন হয়.সা,রে,গা,মা,পা,ধা,নি,সা
পাথরের স্তম্ভগুলি থেকে সংগীত নোটের নির্গমন একটি রহস্য যা বহু মানুষকে বহু শতাব্দী অবধি মুগ্ধ করেছিল।
এমনকি ভারতের ব্রিটিশ শাসকরাও আশ্চর্য হয়েছিলেন এবং বাদ্যযন্ত্রগুলির স্তম্ভের পিছনে গোপনীয়তা আবিষ্কার করতে চেয়েছিলেন। তাদের কৌতূহল মেটানোর জন্য এবং আশ্চর্যজনক স্তম্ভগুলির পিছনে রহস্য উন্মোচন করার জন্য তারা পাথর স্তম্ভের ভিতরে সংগীতের নোটগুলির নির্গমনগুলির ফলে কোনও কিছুর অস্তিত্ব আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য তারা ভিটলা মন্দিরের সংগীত স্তম্ভ কেটেছিলেন। তবে, স্তম্ভগুলির ভিতরে তারা কিছুই খুঁজে পায় নি। মন্দিরটি অবশ্যই একজন সুদক্ষ ও কুশল কাড়িগড়ীর মস্তিষ্কপ্রসুত এই বিশয়ে কোনোও সন্দেহ নেই।
৩. বীরভদ্র মন্দির
বীরভদ্র মন্দির অন্ধ্র প্রদেশের লিপাক্ষী জেলায় অবস্থিত। বীরভদ্র মন্দিরটি, লেপাক্ষী মন্দির নামেও পরিচিত. মন্দিরটি স্থাপত্য সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত, তবে, বেশিরভাগ দর্শনার্থীর মধ্যে যা ধরা পড়ে তা হ’ল মন্দিরটির ঝুলন্ত স্তম্ভ।
ভারতের শীর্ষ দশটি রহস্যময় মন্দির এই মন্দিরের একটি অংশে রয়েছে রহস্যজনক একটি স্তম্ভ।হাজার হাজার বছর ধরে যা ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। মাটি থেকে ১ ইঞ্চি ফাঁক থাকা এই স্তম্ভটি কখনও মাটি স্পর্শ না করেই বছরের বছর দাঁড়িয়ে আছে। এই ফাঁকা অংশ দিয়ে যদি কাপড় গলিয়ে দেওয়া যায় তবে নাকি পূর্ণলাভ হয় এমনটাই মনে করেন এখানে আগত পূর্ণার্থীরা।মন্দিরটি স্থাপত্য সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত, তবে, বেশিরভাগ দর্শনার্থীর মধ্যে যা ধরা পড়ে তা হ’ল মন্দিরটির ঝুলন্ত স্তম্ভ। যদিও মন্দিরে ৭০ টি স্তম্ভ রয়েছে, মন্দিরের চত্বরে ঝুলন্ত একটি স্তম্ভটি আশ্চর্যের প্রকৃত অংশ।এই মন্দিরে আছে একটি প্রকান্ড পাথরের সাপের মুর্তি যা শিব লিঙ্গকে বেষ্টন করে আছে। এই মন্দিরে রয়েছে ভারতবর্ষের সবচেয়ে বড় এবং প্রাচীন নন্দীমূর্তি।অনেকে বিশ্বাস করেন যে একবার একজন ব্রিটিশ স্থপতি এই পিলারের কোন অংশ ভাঙ্গার চেষ্টা করে এর অলৌকিকতা বোঝার জন্য , কিন্তু তিনি সফল হননি .
৪. বৃহদেশ্বর মন্দির
ভারতের শীর্ষ দশটি রহস্যময় মন্দির ভারতের প্রাচীন ও বৃহত্তম মন্দিরগুলোর অন্যতম তামিলনাড়ুর বৃহদেশ্বরের মন্দির।তানজাবুরে অবস্থিত বৃহদেশ্বর্বর মন্দিরটি এটির স্থাপত্য সৌন্দর্যের জন্য প্রশংসিত।ঐতিহ্যবাহী এ মন্দির তৈরি করা হয়েছে দ্রাবিড় স্থাপত্যের অনুকরণে।কথিত আছে, একাদশ শতাব্দিতে তামিল রাজা রাজা চোল প্রথম এই মন্দির নির্মাণ করেন। ইতোমধ্যেই এটিকে ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তকমা দিয়েছে । মন্দিরের নির্মাণশৈলী অপূর্ব। বিশাল সব গ্রানাইট পাথর কেটে গোটা মন্দির তৈরি করা হয়েছে। বস্তুত এটি বিশ্বের প্রথম মন্দির যেটি সম্পূর্ণভাবে গ্রানাইট পাথরে তৈরি। এই মন্দির নির্মাণে ১,৩,০০০ টন গ্রানাইট ব্যবহার করা হয়েছিল বলে অনুমান।মন্দিরের বেশিরভাগ অংশ খাঁটি গ্রানাইট দিয়ে খোদাই করা হয়েছে যা নিজেই অবাক করে দেয় কারণ মন্দিরের ৬০ কিলোমিটারের মধ্যে কোথাও কোনও গ্রানাইট উত্স পাওয়া যায় নি।বৃহদেশ্বর মন্দিরের চূড়ার উচ্চতা ২১৬ ফুট।চূড়ায় রয়েছে একটি আস্ত পাথর। পাথরটির ওজন প্রায় ৮০ টন।মন্দিরের ভেতর আছে ৫ মিটার লম্বা নৃত্যরত শিবের মূর্তি।
৫. অনন্ত পদ্মনাভ স্বামী মন্দির, কেরালা
ভারতের কেরালা রাজ্যের অনন্তপুরম শহরের রাজধানী থিরু কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত অনন্ত পদ্মনাভ স্বামী মন্দির। ভগবান বিষ্ণুই এই মন্দিরে পদ্মনাভ স্বামী হিসেবে পূজিত হন। ঐতিহাসিক কাল থেকেই মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ছিল ট্রাভাঙ্কোর রাজপরিবারের হাতে।ট্রাভাঙ্কোর ছিল কেরালার মধ্য ও দক্ষিণ অংশ নিয়ে গঠিত একটি রাজ্য।
এই মন্দিরে ৭ টি গুপ্ত কক্ষ আছে । যদিও ৬ টি কক্ষ খোলা হয়েছে মাননীয় সুপ্রিম কোটের অনুরোধে , কিন্তু একটা কক্ষ এখনও খোলা হয় নি.।. মন্দিরের ৬ টি কক্ষ থেকে ২২ বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যমানের স্বর্ণের অলঙ্কার পাওয়া গেসে।শ্রী অনন্তপদ্মনাভস্বামী মন্দিরের মূল রহস্য ৭ নম্বর কক্ষকে ঘিরে । এই কক্ষটি আজ পর্যন্ত খোলা সম্ভব হয়নি। এই কক্ষটির দরজায় দুটি সাপের চিহ্ন আঁকা রয়েছে। কিন্তু এই কক্ষের কোনও তালা বা ছিটকানি নেই যা দিয়ে তা খোলা যেতে পারে। কিংবদন্তি অনুসারে এই দরজা ‘নাগবন্ধনম’ দ্বারা আবদ্ধ।। এটাও বিশ্বাস করা হয় যদি কোনোভাবে এই কক্ষের দ্বার খোলা হয় তাহলে এর ফল মারাত্মক হবে ।
আবার এটাও বিশ্বাস করা হয় যে, এই কক্ষ কোনও গুপ্ত মন্ত্রের দ্বারা খুলবে.কথিত আছে বন্ধ দরজায় কান পাতলে নাকি ভিতরে জলের স্রোতের শব্দ শোনা যায়।আবার কারও মতে কক্ষটির ভিতরে সাপের হিস-হিস শব্দও শোনা গিয়েছে।
৬. পুরীর জগন্নাথ মন্দির
পুরীর জগন্নাথ মন্দির ১০৭৮ সালে তৈরি হয়।
পুরীর বিখ্যাত জগন্নাথ মন্দির ভক্তদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এটি ভারতের চরধাম তীর্থস্থানগুলির মধ্যে একটি।এই পুরী জগন্নাথ মন্দিরের কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট আছে, যা কিনা অবিশ্বাস্য ৷পুরীর যে কোনও জায়গা থেকে তাকালে মন্দিরের চুড়ার সুদর্শন চক্র দেখা যায়।
এটি বেশ আশ্চর্যজনক যে, পুরীর মন্দিরের চূড়ায় যে পতাকাটি লাগানো রয়েছে তা সবসময় হাওয়ার
বিপরীত দিকে ওড়ে। দিনের বেলায় হাওয়া সাধারণত
সমুদ্রের দিক থেকে সমুদ্রতটের দিকে আসে। আর সন্ধ্যের সময় সমুদ্রতটের দিক থেকে সমুদ্রের
দিকে হাওয়া চলে। কিন্তু পুরীর ক্ষেত্রে তা ঠিক উল্টো। সকালে তটের দিক থেকে সমুদ্রের
দিকে হাওয়া চলে, এবং সন্ধ্যায় সমুদ্রের দিকে থেকে তটের দিকে হাওয়া বয়।প্রতিদিন
একজন পুরোহিত মন্দিরের গম্বুজটিতে আরোহণ করেন যা ৪৫ তলা বিল্ডিংয়ের মতো লম্বা এবং
পতাকা পরিবর্তন করে। এই অনুষ্ঠানটি ১৮০০ বছর থেকে অব্যাহত রয়েছে। আচার অনুসারে যদি
কোনও দিন পতাকা পরিবর্তন না করা হয় তবে পরবর্তী ১৮ বছর ধরে মন্দিরটি বন্ধ রাখতে হবে।কোনও পাখি বা বিমান পুরী মন্দিরের উপর দিয়ে উড়তে পারে না।
মন্দিরের সবচেয়ে বড় প্রাসাদটির ছায়া দিনের যে কোনও
সময় অদৃশ্য থাকে।
পুরী মন্দিরের সবচেয়ে অবিশ্বাস্য বৈশিষ্ট হল প্রসাদ।
সারা বছর ধরেই সমপরিমান প্রসাদ রান্না করা হয়। কিন্তু ওই একই পরিমান প্রসাদ দিয়ে কয়েক
হাজার মানুষ হোক বা ২০ লক্ষ মানুষকে খাওয়ানো হোক তবু প্রসাদ কখনও নষ্ট হয় না বা কখনও
কম পড়ে না।
সাধারণত কোনও মন্দিরে বিগ্রহ নয় পাথর নয় ধাতু দিয়ে
তৈরি করা হয়। কিন্তু পুরীর মন্দিরে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা তিনজনের বিগ্রহই কাঠের
তৈরি। প্রত্যেক ১২ বছর পর একটি গোপন রীতি মেনে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে নতুন শরীর
দেওয়া হয়।
৭. শ্রী রাঙ্গনাথস্বামী মন্দির
ভারতের শীর্ষ দশটি রহস্যময় মন্দির খ্রিস্টীয় প্রথম থেকে চতুর্থ শতকের মধ্যে গড়ে ওঠে শ্রী রাঙ্গনাথস্বামী মন্দির। দক্ষিণ ভারতের বৈষ্ণব আন্দোলনের পীঠস্থান এই মন্দির। ১৫৫ একর জুড়ে ছড়ানো রঙ্গনাথস্বামী’ মন্দির চত্বরে রয়েছে ৫০টি ছোট মন্দির ও ২১টি মিনার ও ৩৯টি নাটমন্দির। . একদিক থেকে দেখলে এটি যেন একটি ‘মন্দির নগরী’..
এই মন্দিরে লক্ষ্য করা যায় মধ্যযুগের দাক্ষিণাত্যের সভ্যতার সমস্ত নিদর্শণ।
শ্রী রাঙ্গনাথস্বামী মন্দিরের প্রধান দেবতা শ্রীরাঙ্গম। রঙ্গনাথস্বামী মন্দিরটি ভগবান বিষ্ণুর এক রূপ রাঙ্গনাথকে উত্সর্গীকৃত। শ্রী রাঙ্গনাথস্বামী মন্দিরে প্রায় ১০০০ টি স্তম্ভের একটি হল রয়েছে যা গ্রানাইট দিয়ে তৈরি।
শ্রী রঙ্গনাথস্বামী মন্দির চত্বরে রামানুজাচার্যের উদ্দেশ্যে নিবেদিত একটি মন্দির রয়েছে। সেই মন্দিরে ‘মমি’ করে রাখা হয়েছে রামানুজাচার্যের শরীর। আর সেই মমি করা শরীরের সামনেই প্রার্থনা ও পূজা করেন ভক্তরা।রামনুজাচার্য ১০১৭ খ্রিস্টাব্দে পেরুমবুদুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শ্রীরঙ্গম হয়ে ওঠে তাঁর ধর্মভাবনা প্রকাশের প্রধানতম ক্ষেত্র। তিনি শ্রী রঙ্গনাথস্বামী মন্দিরের প্রধান পুরোহিতও হন। কথিত রয়েছে, স্বয়ং বিষ্ণুর নির্দেশেই রামানুজাচার্যের দেহকে সংরক্ষণ করে মূর্তির আকার দেওয়া হয়. আশ্চর্যজনক হল শ্রী রাঙ্গানাথস্বামী মন্দিরে শ্রী রামানুজাচার্যের ১০০০ বছরের পুরানো শবদেহ রয়েছে এবং তার আসল দেহটি স্বাভাবিক বসা অবস্থায় রাখা হয়েছে .এটি দেখার জন্য সবার জন্য উন্মুক্ত।
৮. কদু মল্লেশ্বর মন্দির
কদু মল্লেশ্বর মন্দিরটি বেঙ্গালুরুর মল্লেশ্বরম অঞ্চলে অবস্থিত . মন্দিরটি সতেরো শতকের।দ্রাবিড় শৈলীর স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এটি একটি বিস্ময়কর এবং বেঙ্গালুরুর অন্যতম বিখ্যাত মন্দির। মন্দিরে পৌঁছতে একজনকে প্রায় চল্লিশ ধাপে উঠতে হয়।এই মন্দিরের প্রধান দেবতা হলেন ‘শিব লিঙ্গম’ আকারে শিব।মন্দিরটি ‘দক্ষিণামুখী নন্দী’ নামেও পরিচিত,
মন্দিরের মধ্যে কার্যাবলীগুলি খুব আকর্ষণীয়। উদাহরণস্বরূপ, নন্দীর মুখ থেকে প্রবাহিত জল। এই জলটি নন্দীর মুখ থেকে শিবলিঙ্গের ওপরে প্রবাহিত হয় যাকে বলা হয় ‘কল্যাণী’। মন্দিরের ভিতরে একটি ছোট্ট জলের সন্ধান ও পাওয়া গেছে.তবে জলের উত্স এখনও অজানা।
৯. কানপুরের জগন্নাথ মন্দির
ভারতের শীর্ষ দশটি রহস্যময় মন্দির এই জগন্নাথ মন্দিরটি …উত্তর প্রদেশের কানপুর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি প্রাচীণ মন্দির।এই মন্দিরটিতে এক হাজার বছরের পুরনো ভগবান জগন্নাথের মূর্তিতেই আজও পুজো হয়।
এই মন্দিরে ভগবান বিষ্ণুরও একটি মূর্তি স্থাপন করা রয়েছে। …এখানে বিষ্ণুর মোট ২৪ টি অবতারের মূর্তি স্থাপন করা আছে।এই মন্দির নিয়ে চলেছে প্রচুর গবেষণা ।… তার কারণ হলো এক অবাক করা রহস্য, যার কারণ আজও অজানা। … কানপুরের এই জগন্নাথ মন্দিরটি ‘রেইন টেম্পল’ বা ‘বর্ষা মন্দির’ নামেও পরিচিত এবং শত শত বছরেরও বেশি পুরানো।
স্থানীয়দের বিশ্বাস, বৃষ্টি শুরু হওয়ার ৬-৭ দিন আগেই পূর্বাভাস দেয় এই মন্দির।স্থানীয়দের কৃষকদের বক্তব্য, মন্দিরের ছাদ চুঁইয়ে পড়া জলের ফোঁটার পরিমাণ দেখে ভারী, মাঝারি না ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হবে তা আন্দাজ করা যায়। মজার বিষয় হল, বৃষ্টি শুরু হলে তখন আর মন্দিরের ছাদ চুঁইয়ে জল পড়া একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। মন্দিরের ছাদে তখন জলের চিহ্ন পর্যন্ত পাওয়া যায় না। যে বছর ভারি বর্ষা হয় সেই বছর মুষলধারে জল পড়তে থাকে মন্দিরের ছাদ থেকে। আবার যে বছর বৃষ্টি হবে হালকা, সেই বছর ছাদ থেকে ঝরে পড়া জলের ধারাও হয় ক্ষীণ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, যুগ যুগ ধরে এ নিয়মের কোনও ব্যতিক্রম হয়নি
আশেপাশে ৫০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে প্রায় ৩৫টি গ্রামের মানুষজন বৃ্ষ্টির আগাম খবর পেতে এই মন্দিরের উপরেই নির্ভর করেন আজও। সেই অনুসারেই চাষবাসের বন্দোবস্ত করেন তাঁরা।,তাঁদের বিশ্বাস, সবটাই ঈশ্বরের লীলা।
১০. পঞ্চ ভূত স্টালাম মন্দির
দক্ষিণ ভারতের পাঁচটি শিব মন্দির পঞ্চ ভূত স্টালাম নামে পরিচিত.
ভারতের শীর্ষ দশটি রহস্যময় মন্দির একম্ব্বরেশ্বর মন্দির (কাঞ্চিপুরম), জাম্বুকেশ্বরর মন্দির তিরুভানাইকাভাল, অরুণাচলেশ্বর মন্দির তামিলনাড়ুতে তিরুভান্নমালাই, নটরাজ মন্দির চিদাম্বরম,শ্রীকলাহাটি মন্দিরটি ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যের শ্রীকালাহাটি শহরে অবস্থিত.ভগবান শিব বা মহাদেব প্রকৃতির পাঁচটি উপাদান বা পঞ্চ ভূতকে নিয়ন্ত্রণ করেন: পৃথিবী, জল, আগুন, বাতাস এবং স্থান। এই পাঁচটি মন্দিরে পাঁচটি উপাদানের প্রতিমূর্তি হিসেবে ভগবান শিবকে পূজা করা হয়।
তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো ভৌগোলিকভাবে একটি লাইন টানলে এই পাঁচটা শিব মন্দির প্রায় বলতে গেলে ওই একই লাইনের উপর অবস্থিত।কিন্তু এই পাঁচটি শিব মন্দির আলাদা আলাদা শহরে অবস্থিত।
যে যুগে কোনও বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম ছিল না, সেই সময় এই মন্দিরগুলি কীভাবে এত্ত নিখুঁত পরিমাপে তৈরি করা হয়েছিল, তা আজও এক রহস্য হয়ে আছে.