বলরাম হলেন শ্রী কৃষ্ণের জ্যেষ্ঠভ্রাতা। বলরামকে বিষ্ণুর শয্যারূপী শেষনাগের একটি রূপ বলেও মনে করা হয়। তিনি বলদেব, বলভদ্র ও হলায়ুধ নামেও পরিচিত। আবার তিনি হলধারী নামেও পরিচিত। কারণ বলরামের অস্ত্র এক বিশাল লাঙল। বলরাম ছিলেন প্রচণ্ড বলশালী তবুও তিনি মহাভারতের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। আপনাদের জানাবো বলরাম কেন মহাভারতের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি?
দ্বাপর যুগের শেষের দিকে বলরামের জন্ম হয় রোহিণীর গর্ভে। রোহিণী ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের পিতা বসুদেবের অন্য এক পত্নী ও নন্দের ভগিনী। শ্রীহরি বিষ্ণুর শেষ নাগের অবতার হলেন বলরাম। অত্যাচারী কংসের কারাগারে বসুদেব ও দেবকীর সপ্তম গর্ভে বলরাম আসেন, কিন্তু কংসের হাত থেকে এই শিশুকে বাচানোর জন্য শ্রীহরির আদেশে দেবী যোগমায়া দেবকীর সপ্তম গর্ভের ভ্রূণ সেখান থেকে নন্দগৃহে রোহিণীর গর্ভে স্থাপন করেন । ফলে দেবকী সপ্তম সন্তান মৃত জন্ম দেয় আর রোহিণীর গর্ভে বলরামের জন্ম হয় ।
কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে বলরাম কোনও পক্ষই অবলম্বন করেননি যদিও তিনি প্রচণ্ড বলবান ছিলেন।
শ্রীকৃষ্ণের বড় ভাই বলরাম শ্রীকৃষ্ণকে বেশ কয়েকবার বলেছিলেন যে আমাদের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা উচিত নয় কারণ দুর্যোধন ও অর্জুন উভয়ই আমাদের কাছে সমান। এমন সঙ্কটের সময়ে উভয় পক্ষেরই কারো পক্ষ না নেওয়াই বাঞ্ছনীয়। একদিন বলরাম পাণ্ডব শিবিরে এসেছিলেন যখন যুদ্ধের প্রস্তুতি চলছিল। বলরামকে দেখে ।
শ্রী কৃষ্ণ, যুধিষ্ঠির প্রমুখরা সকলেই খুব খুশী হলেন। সবাইকে অভিবাদন জানানোর পর, বলরাম ধর্মরাজের সাথে বসলেন এবং বললেন আমি কতবার কৃষ্ণকে বলেছিলাম যে পাণ্ডব এবং কৌরব উভয়ই আমাদের কছে সমান। আমাদের তাদের মাঝখানে যাওয়ার দরকার নেই।
কিন্তু কৃষ্ণের প্রিয় সখা ছিল অর্জুন আর পাণ্ডবরা সবসময় ধর্মের পথে থাকত এজন্য কৃষ্ণ অর্জুন এর রথের সারথী হয়েছিলেন। যদিও দুর্যোধনই কৃষ্ণকে নির্বাচন না করে তার সেনাবাহিনীকে নির্বাচন করেছিল তাদের পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য। কেননা কৃষ্ণ বলেছিলেন তিনি এই যুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করবেন না। বলরাম ভীম এবং দুর্যোধনের গুরু ছিলেন। তারা দুজনেই বলরামের কাছে গদাযুদ্ধ শিখেছিলেন।তারা দুজনেই তাদের পক্ষে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য বলরামের কাছে এসেছিলেন। কিন্তু তিনি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিলেন। ভীমের তুলনায় দুর্যোধন ছিলেন বলরামের প্রিয় ছাত্র। এমনকি তিনি নিজের বোন সুভদ্রার সঙ্গে দুর্যোধনের বিয়ে দিতেও চেয়েছিলেন।