পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র জীবন্ত মন্দির হল মাতঙ্গেশ্বর মন্দির। এই মন্দিরের শিবলিঙ্গকে জীবিত শিবলিঙ্গ বলা হয়। আজকের এই ভিডিও সেই জীবিত শিবলিঙ্গ সম্পর্কে।
মাতঙ্গেশ্বর মন্দির ভারতের মধ্যপ্রদেশের খাজুরাহে অবস্থিত। নবম ও দশম শতক থেকেই শুরু হয়েছিল খাজুরাহে মন্দির নির্মাণের কাজ। সেই সময় খাজুরাহেতে ছিল চান্দেল রাজাদের রাজত্ব। তাদের তত্বাবধানে এখানে তৈরী হয়েছিল ৮৫টি মন্দির যার মধ্যে মাত্র ২২টি মন্দির এখনও পর্যন্ত টিকে আছে। এই ২২টি মন্দিরের মধ্যে আছে বিষ্ণু, শিব, লক্ষণ, দুর্গা, কৃষ্ণ ও জৈন প্রভৃতি দেব দেবীর মন্দির।
মন্দির নির্মাণকর্মীদের শিল্পের মাধুর্য এতটাই প্রবল এবং সৃষ্টি শৈলী এতটাই দৃঢ় ছিল যে লক্ষ লক্ষ প্রস্তর খন্ডও হয়ে উঠেছিল জীবন্ত।
মাতঙ্গেশ্বর মন্দিরের শিবলিঙ্গটি এখনও বেড়ে চলেছে। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে ভক্ত ভিড় জমান ওই মন্দিরে। খাজুরাহে মন্দিরগুলির মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য মন্দির হল মাতঙ্গেশ্বর মন্দির। এখানে এমন একটি শিবলিঙ্গ রয়েছে, যাকে বলা হয় জীবন্ত শিবলিঙ্গ। এই রহস্যময় জীবন্ত শিবলিঙ্গ মন্দিরের গর্ভগৃহে রয়েছে। এই শিবলিঙ্গ বর্তমানে প্রায় ৯ ফুট দৈর্ঘের।
তবে এখনও এই শিবলিঙ্গ প্রতি বছর শরদ পূর্ণিমা তিথিতে এক ইঞ্চি করে বেড়ে চলেছে, যা মন্দিরের পুরোহিতরা মেপে থাকেন। বলা হয়, এই শিবলিঙ্গটি ঠিক যতটা মাটির উপরে আছে, ঠিক ততোটাই মাটির নীচেও রয়েছে। দুদিকেই সমান ভাবে বাড়ছে এই শিবলিঙ্গ। পুরাণ মতে, ভগবান শিবের কাছে একটি মার্কট মনি ছিল। এই মনিটি তিনি পাণ্ডবদের প্রধান যুধিষ্ঠিরকে দিয়েছিলেন। যুধিষ্ঠির আবার এই মনি মাতঙ্গ ঋষিকে দিয়েছিলেন। আবার মাতঙ্গ মুনি ওই প্রচণ্ড ক্ষমতা সম্পন্ন মার্কট মনি রাজা হর্ষবর্মনকে দিলে, তিনি মনিটি মাটির নীচে রেখে দেন।
অবশেষে এই মনি দেখাশোনার জন্য কাউকে পাওয়া না গেলে, ওই মনি মাটির নীচে যে স্থানে পুতে রাখা হয়েছিল, তার চারিপাশে শিবলিঙ্গের নির্মান করা হয়। যেহেতু এই মনি মাতঙ্গ ঋষি রাজা হর্ষবর্মনকে দিয়েছিলেন, তাই মনিকে মাতঙ্গেশ্বর মনি বলা হয়।
কথিত আছে এই মনির কারণেই এই শিবলিঙ্গ এখনও বেড়ে চলেছে। মানুষের মতোই প্রতি বছরই এই শিবলিঙ্গ বেড়ে চলেছে। মন্দিরের পুরোহিতদের ধারণা, এই শিবলিঙ্গের উপরের অংশ স্বর্গের দিকে এবং নীচের অংশ পাতালের দিকে যাচ্ছে। এই ভাবে শিবলিঙ্গের নীচের অংশ যেইদিন সম্পূর্ণ পাতালে পৌঁছে যাবে, সেদিন কলিযুগের সমাপ্তি ঘটবে। যদিও এইকথা পুরোহিতদের ধারণা তবু্ও ভগবানের লীলা বোঝা বড় কঠিন।