বেদব্যাসের জন্ম রহস্য বেদব্যাস হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে একজন ঋষি ছিলেন। ইনি বশিষ্ঠের প্রপৌত্র, এবং পরাশরের পুত্র। ইনি হিন্দুধর্মের বেদের -বিন্যাসকারী জ্ঞানান্বেষী একজন ঋষি।সত্যবতীর গর্ভে যমুনার একটি দ্বীপে তার জন্ম হয়। যমুনার দ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন বলে এর নাম হয় দ্বৈপায়ন। এঁর গায়ের রং কালো ছিল বলে, পুরো নাম দাঁড়ায় কৃষ্ণ-দ্বৈপায়ন। শান্তনুর সাথে বিবাহ হওয়ার পূর্বেই বেদবাস সত্যবতীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন। বেদবাসের পিতা ছিলেন পরাশর মুনি। কিভাবে পরাশর মুনির সন্তান সত্যবতীর গর্ভে এল।
উপরিচর বসু বেদব্যাসের জন্ম রহস্য সত্যবতী চেদীরাজ এবং অপ্সরা অদ্রিকার কন্যা শাপগ্রস্তা মৎস্যরূপিণী। তাকে তার যমজ ভাইয়ের সাথে অদ্রিকার উদরে পান ধীবরদের রাজা দাশ। রাজা বসু পুত্র সন্তানটিকে নিজের কাছে রেখে সত্যবতীকে দাশের কাছে পরিপালন করতে দেন।পরে সত্তবতির ভাই একজন খুভ ধারমিক রাজা হন। সত্যবতী রুপে ছিলেন অতুলনীয় কিনতু মৎস কন্যাা বলে তার গায়ে তীব্র মাছের গন্ধ থাকায সত্যবতীর আরেক নাম ‘মৎস্যগন্ধা’। এজন্য কেউ তার কাছে আসতে চাইত না।তাই পালকপিতার নির্দেশে তিনি যমুনার বুকে নৌকা চালানো আর জেলেনীর কাজ করতে থাকেন।অনেক ঋষিরা তাকে দেখে মুগ্ধ হতেন। মুনিঝষিদের মনও তাকে দেখে,অন্য দিকে চলে যেত।
বেদব্যাসের জন্ম রহস্য
সত্যবতীর একদা ঋষি পরাশর নৌকায় উঠে তার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন।দেবী ভাগবত পুরাণের বর্ণনা অনুসারে যখন সত্যবতী ঋষি পরাশরকে তখন পরাশর সত্যবতীর ডান হাত ধরেন সত্যবতীর তার কামনা পূরণের উদ্দেশ্যে যমুনা নদীতে খেয়া পার করছিলেন। সত্যবতী তাকে নিবৃত্ত করার জন্য বলেন তার মত বেদজ্ঞ ঋষির পক্ষে এমন এক নারীর সহবাস প্রার্থনা অনুচিত যাঁর গা থেকে মাছের দুর্গন্ধ বের হয়। অবশেষে সত্যবতী পরাশরের জেদের কাছে হার মানেন কারণ তার ভয় হয় যে ঋষি যদি ক্রোধে মাঝ নদীতে নৌকা ডুবিয়ে দেন। সত্যবতী সম্মত হয়ে ঋষিকে বলেন যতক্ষণ না নৌকা অপর কূলে পৌছায় ততক্ষণ আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। ।
ঋষি নৌকা পৌছাতেই পাড়ে পুনর্বার হাত ধরেন হবে না সত্যবতী বলেন সুখকর তাই তাদের মিলন সত্যবতীর তার গায়ে মাছের দুর্গন্ধ কিন্তু। এর ফলে পরাশর সত্যবতীর দুর্গন্ধকে সুগন্ধে পরিণত করেন। যার ফলে তার নাম যোজনগন্ধা হয়। কিন্তু পুনরায় বলেন প্রকাশ্য দিবা লোকে তাদের মিলন হলে তাদের সবাই দেখে ফেলবে আর তার সত্যবতী কুমারীত্ব নষ্ট হলে সমাজ তাকে গ্রহণ করবে না । ঋষি যমুনার কুলে ঘন কুয়াশার সৃষ্টি করেন ও তাকে এই বর দেন তার সাথে মিলন হলেও এবং সে রাজপত্নী হবে সত্যবতী কুমারীত্ব হারাবেন না। তখন মনে আর কোন সংশয় রইল না সত্যবতীর।
বেদব্যাসের জন্ম রহস্য
মহাত্মা ঋষির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা আর তার ঔরসে এক বিদ্বান পুত্রকে গর্ভে ধারণ করার অভিলাষ জাগে তার মনে। নদীর পারে তারা দৈহিক মিলনে আবদ্ধ হলে তাদের মিলনের ফলে মহর্ষির সত্যবতী ঔরসে গর্ভবতী হয়। কিছুকাল পরে সে এক পুত্রসন্তান প্রসব করে। সেই পুত্র জন্ম মাত্রই পূর্ণতা প্রাপ্ত হয়। তার গায়ের রঙ কালো বলে নাম হল কৃষ্ণ আর দ্বীপে জন্ম বলে নাম হল দ্বৈপায়ন।
বেদব্যাসের জন্ম রহস্য
বেদকে চার ভাগে ভাগ করে বেদব্যাস নাম প্রাপ্ত হন। তিনি তার পিতার সাথে তপস্যা করতে চলে যান আর মাকে বলেন তাকে স্মরণ করলেই তিনি সত্যবতীর সাহায্যের জন্য চলে আসবেন। এতো বড় একটা সত্য ঘটনা সত্যবতী লুকিয়ে রাখেন না।তিনি সব ঘটনা তার পিতাকে বলে দেন। এই ঘটনার পর তার নামটা আরও ভাল পূর্নতা পায়। পরে সত্যবতীর এতো সুন্দর রুপ এবং শরীরের ফুলের গন্ধ রাজা শান্তনু কে আকৃষ্ট করে। বিয়ের পর তাদের বিচিএবীর্য নামে একটি পুএ সন্তান হয়।